পরিবেশে বাস্তুতন্ত্র একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একক। যেকোনো পরিবেশে বাস্তুতন্ত্র মোটামুটিভাবে স্বনিয়ন্ত্রিত। প্রকৃতিতে যেকোনো জীবের সংখ্যা হঠাৎ করে বেশি বাড়তে পারে না। প্রতিটি জীব একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে এরা পরস্পর পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সহজে এর কোনো একটি অংশ একেবারে শেষ হতে পারে না। কোনো একটি পরিবেশে বিভিন্ন স্তরের জীব সম্প্রদায়ের সংখ্যার অনুপাত মোটামুটিভাবে অপরিবর্তিত থাকে। পরিবেশে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটলেও বহু দিন পর্যন্ত প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকে। এসো একটি উদাহরণের সাহায্যে আমরা এ বিষয়টি বুঝতে চেষ্টা করি। মনে কর কোনো একটি বনে বাঘ, হরিণ, শূকর ইত্যাদি বাস করে। এ বনে বাঘের খাদ্য হলো হরিণ ও শূকর। হরিণ ও শূকরের সংখ্যা বেড়ে গেলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কারণ বাঘ প্রচুর খাদ্য পাবে। আবার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে হরিণ ও শূকরের সংখ্যা কমে যাবে। হরিণ ও শূকরের সংখ্যা কমে গেলে বাঘের খাদ্যাভাব দেখা দিবে। ফলে বাঘের সংখ্যাও কমে যাবে। আবার বাঘের সংখ্যা যদি কমে যায় তবে হরিণ ও শূকরের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এভাবে হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে একটি এলাকার বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
কাজ : পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করো। দল গঠন করো। যেকোনো একটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে শ্রেণিতে উপস্থাপন করো। |
নতুন শব্দ : বাস্তুতন্ত্র, খাদ্যশৃঙ্খল, খাদ্যজাল, ফাইটোপ্লাঙ্কটন, জু-প্লাঙ্কটন
এ অধ্যায় পাঠ শেষে যা শিখলাম
- যেকোনো একটি পরিবেশের জড় এবং জীব সম্প্রদায়ের মধ্যে আদান-প্রদান, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠে বাস্তুতন্ত্র।
- অজীব এবং জীব এই দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে বাস্তুতন্ত্র গঠিত।
- উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে একে অন্যকে খাওয়ার মাধ্যমে শক্তির যে স্থানান্তর ঘটে তাই খাদ্যশৃঙ্খল।
- প্রকৃতিতে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। খাদ্যশৃঙ্খলের এ ধরনের সংযুক্তি খাদ্যজাল নামে পরিচিত।